 সার্চ করুন
                                    সার্চ করুন
                                আমের
উৎপাদন প্রযুক্তি
মাটি 
          গভীর,
সুনিষ্কাশিত,উর্বর দোঅাঁশ মাটি আম চাষের জন্য উত্তম। উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি
নির্বাচন করতে হবে।
জমি
তৈরি
          চাষ
ও মই দিয়ে জমি সমতল এবং আগাছামুক্ত করে নিতে হবে।
রোপণ
পদ্ধতি
          সমতল
ভূমিতে-বর্গকার বা আয়তাকায়, পাহাড়ি ভূমিতে কন্টুর। এক বছর বয়স্ক সুস্থ, সবল ও
রোগমুক্ত কলমের চারা রোপণ করতে হবে। 
চারা
রোপণের সময়
          জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়
(মধ্য-মে থেকে মধ্য-জুলাই) এবং ভাদ্র-আশ্বিন মাস (মধ্য-আগস্ট থেকে মধ্য-অক্টোবর)।
চারা
রোপণের দূরত্ব
৮ থেকে ১০ মিটার।
গর্ত
তৈরি
          গর্তের
আকার ১ মি*১মি*১মি।
সারের
পরিমাণ 
| সারের নাম | প্রতি গর্তে সারের পরিমাণ | 
| জৈব সার  | ১৮-২২ 
  কেজি | 
| ইউরিয়অ | ১০০-২০০ গ্রাম | 
| টিএসপি | ৪৫০-৫৫০ গ্রাম | 
| এমপি | ২০০-৩০০ গ্রাম | 
| জিপসাম | ২০০-৩০০ গ্রাম | 
| জিংক সালফেট | ৪০-৬০ 
  গ্রাম | 
চারা
রোপণ
          গর্ত
ভর্তির ১০-১৫ দিন পর চারার গোড়ার মাটির বলসহ গর্তের মাঝখানে সোজাভাবে লাগাতে হবে।
চারা রোপণের পর পানি, খুঁটি ও বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
সার
প্রয়োগ
          একটি
পূর্ণ বয়স্ক ফলমত্ম গাছে বছরে ৫০ কেজি জৈব সার, ২ কেজি ইউরিয়অ, ১ কেজি টিএসপি, ৫০০
গ্রাম এমপি, ৫০০ গ্রাম জিপসাম ও ২৫ গ্রাম জিংক সালফেট প্রয়োগ করতে হবে। উলেস্নখিত
সার ২ কিসিত্মতে প্রয়োগ করতে হবে। ১ম বার জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় (মধ্য-মে থেকে মধ্য-জুলাই)
মাসে এবং ২য় বার আশ্বিন (মধ্য-সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য-অক্টোবর) মাসে প্রয়োগ করতে
হবে।
সেচ
প্রয়োগ
          চারা
গাছের দ্রম্নত বৃদ্ধির জন্য ঘন ঘন সেচ দিতে হবে। ফলমত্ম গাছের বেলায় আমের মুকুল
ফোটার শেষ পর্যায়ে ১ বার এবং ফল মটর দানার আকৃতি ধারণ পর্যায়ে আবার ১ বার বেসিন
পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগ করতে হবে।
ডাল
ছাঁটাইকরণ
          গাছের
প্রধান কান্ডটি যাতে সোজাভাবে ১ থেকে ১০৫ মিটার ওঠে সেদিকে লক্ষ্য রেখে গাছের
গোড়ার অপ্রয়োজনীয় শাখা কেটে ফেলতে হবে।
গাছের
মুকুল ভাঙ্গন
কলমের গাছেল বয়স ৪ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যমত্ম মুকুল
ভেঙ্গে দিতে হবে।
ফল
সংগ্রহ
          গাছে
কিছু সংখ্যক আমের বোঁটার নিচের ত্বক যখন সামান্য হলুদাভ রং ধারণ করে অথবা আদাপাকা
আম গাছ থেকে পড়া আরম্ব করে, তখনই আম সংগ্রহ করার উপযুক্ত সময়। গাছ ঝাকি দিয়ে আম না
পেড়ে ছোট গাছের ক্ষেত্রে হাত দিয়ে এবং বড় গাছের ক্ষেত্রে জালিযুক্ত বাঁশের কোটার
সাহায্যে আম সংগ্রহ করা ভাল।
অন্যান্য
পরিচর্যা
আমের
এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দমন
          এ্যানথ্রাকনোজ
রোগের আক্রমণে গাছের পাতা, কান্ড, মুকুল ও ফলে ধূসর বাদামি রংয়ের দাগ পড়ে। এ রোগে
আক্রামত্ম মুকুল ঝরে যায়।, আমের গায়ে কালচে দাগ হয় এবং আম পচে যায়। কুয়াশা,
মেঘাচ্ছন্ন ও ভিচা আবহাওয়ায় এ রোগ ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে এবং সমস্ত মুকুল ঝরে
যায়।
প্রতিকার
1.    আমের মৌসুম শেষে গাছের মরা ডালাপালা কেটে
পুড়ে ফেলতে হবে। কাটা অংশে বরদোপেষ্ট (প্রতি লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম তুঁতে ও ১০০
গ্রাম চুন) লাগাতে হবে।
2.    গাছের মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বে
টিল্ট-২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি অথবা ডাইথেন এম-৪৫, ২ গ্রাম প্রতি
লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের আকার মটর দানার মত হলে ২য় বার স্প্রে
করতে হবে।
আমের
মুকুলের পাউডারি মিলডিউ রোগ দমন
          ওইডিয়াম
ম্যাঙ্গিফেরী নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ 
হয়। আমের মুকুলে সাদা পাউডারের মত আবরণ দেখা যায়। এ রোগের আক্রমণে মুকুল
ঝরে যায়। আক্রামত্ম আমের চামড়া খসখসে হয় এবং কুঁচকে যায়। আমের দাম অনেক কম হয়। মেঘলা
দিনে বাতাসের মাধ্যমে এ রোগ বেশি বিস্তার লাভ করে।
প্রতিকার
1.   
গাছে
মুকুল আসার পর এক বার ফল মটর দানা আকারের হলে আর এক বার থিওভিট প্রতি লিটার পানিতে
২ গ্রাম অথবা টিল্ট ২৫০ ইসিপ্রিতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি মিশিয়ে ভালভাবে স্প্রে
করতে হবে।
আমের
ভোমরা পোকা দমন
          আমের
ভোমরা পোকার কীড়া আমের গায়ে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে শাঁস খায়। সাধারণত কচি আমে ছিদ্র
করে এরা ভিতরে ঢুকে এবং ফল বড় হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্রটি বন্ধ করে দেয়। এজন্য বাইরে
থেকে আমটি ভাল মনে হলেও ভিতরে কীড়া পাওয়া যায়। একবার কোন গাছে এ পোকার আক্রমণ হলে
প্রতি বছরই সে গাছটি আক্রামত্ম হয়ে থাকে। ক্রমে ক্রমে পার্শ্ববর্তী গাছসমুহে তা
ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিকার
1.   
আম
গাছের মরা ও অতিরিক্ত পাতা শাখা এবং পরগাছা কেটে ফেলতে হবে।
2.   
গাছে
ফল আসার ১-২ সপ্তাহ পর ১৫ মিলি ডাইমেক্রন ৫৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পর ২ বার
স্প্রে করতে হবে। ডাইমেক্রন-১০০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি মিশিয়ে অথবা
ডায়াজিনন ৬০ ইসি বা লিবাসিড ৫০ ইসি ২ মিলি হারে বা সুমিথিয়ন ৫০ ইসি ২ মিলি মিশিয়ে
১৫ দিন পর পর ২ বার স্প্রে কওে ভাল ফল পাওয়া যায়।
অন্যান্য
প্রযুক্তি
আমের
পরিপক্কতা শনাক্তকরণ
          গবেষণার
মাধ্যমে কয়েকটি উন্নত জাতের আমের পরিপক্কতা নির্দেশক নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব
নির্দেশক দেখে আম সংগ্রহ করলে আমের গুণগত মান ভাল থাকে এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা
যায়। এতে পরিবহণে অপচয়ও কম হয়। কতগুলো উন্নত জাতের আমের পরিপক্কতার নির্দেশক ও
সংগ্রহের সময় নিচে উল্লেখ করা হল।
আমের
পরিপক্কতার নির্দোশকসমূহ
| আমের জাত | পরিপক্কতার সময়কার (গুটি ধরার পর থেকে) | পরিপক্কতা নির্দেশক/ঘনত্ব | ||
|  |  | লবণের দ্রবণে 
  ডুবে যাবে | লবণের দ্রবণে ভাসবে | |
| গোপালভোগ | ৮৪-৯১ দিন | ১-৪% | ৪% এর বেশি | |
| খিরসাপাত | ৮৭-৯৫ দিন | ১-৪% | ৪% এর বেশি | |
| ল্যাংড়া | ৯৭-১০৫ দিন | ১-৩% | ৩% এর বেশি | |
| ফজলী | ১১২-১২০ দিন | ১-৩% | ৩% এর বেশি | |
| বোম্বাই | ৯৮-১০৫ দিন | ১-২% | ২% এর বেশি | |
| আশ্বিনা | ১৩৯-১৪৬ দিন | ১-২% | ২% এর বেশি | |
অন্যান্য
তথ্য
খোসার রং     -
বোটার নিচের ত্বক সামান্য হলদে।
শাঁসের রং      -
হালকা হলদে।
পানিতে ছাড়লে         -
ডুবে যাবে।
 
                                
উত্তর সমূহ